রং-তুলির আঁচড়ে রঙিন হল সাভারের সড়ক বিভাজক

ঢাকাআরিচা মহাসড়কের সাভার থানা স্ট্যান্ড অংশে আরিচামুখী সার্ভিস লেন ধরে যাওয়ার পথে সড়ক বিভাজকে চোখ আটকে যাবে যেকারো। সড়ক বিভাজকের ক্যানভাসে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আঁকা নানা রকম গ্রাফিতি। দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িকতা, ছাত্রজনতার আন্দোলন ঘিরে নিহতদের হত্যার বিচারের দাবী উঠে এসেছে গ্রাফিতির মাধ্যমে। গণঅভ্যুত্থানের পর এ সব শিল্পকর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদেরদ্রোহের ভাষাছড়িয়ে দিচ্ছেন।

সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রাফিতি অঙ্কন করছে শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্র সংষ্কারের অংশ হিসেবে ঢাকার সাভারেও একদল শিক্ষার্থী ও বসুন্ধরা শুভসংঘ এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত শনিবার (১০ আগষ্ট) থেকে সাভারের থানা স্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক বিভাজকে ও থানা সংলগ্ন নবনির্মিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্টের প্রাচীরে গ্রাফিতি অঙ্কন করে শিক্ষার্থী ও বসুন্ধরা শুভসংঘের স্বেচ্ছাসেবীরা। পাশাপাশি তারা অযাচিতভাবে লাগানো রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পোস্টারও পরিষ্কার করেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেয়ালকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিবাদ, দেশপ্রেম, সাম্যভ্রাতৃত্ববোধ ও পশুপাখির প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার বার্তা।আমার বিচার তুমি কর, তোমার বিচার করবে কে?’, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি‘, ‘ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার‘, ‘বিকল্প কে? আমি, তুমি, আমরা‘, ‘এই শহর হোক সকল প্রানীরস্লোগানসহ বিভিন্ন বিদ্রোহী চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেয়ালে দেয়ালে।

পাঁচ দিনব্যাপী এ গ্রাফিতি অঙ্কন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন সাকিব হোসেন ফাহিম, পিটার বিশ্বাস, আরাবী রিমি, আয়েশা সিদ্দিকা, আহনাফ নাহিয়ান, বিজয়, অন্যন্যা আজরিন প্রিয়ন্তি, আনিসা, অর্নি, সারা, আরশি, তাসনুভা, প্রত্যয়, আকিব, মামুন, আবির, অরিত্রা, ইশা, আফরিন, মাহি ইসরাফিল, কাশফিয়া, আনিকা নাওয়ার, জেরিন, সিরাত, তাজরি আমিরা হক, তাসনিয়া ফিরোজ সুবহা ও ফারহান রাজু।

শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীরা বলেন, গ্রাফিতি আমাদের প্রতিবাদের ভাষা। এর মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সমস্যা ও এর সমাধান ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকবেন, তাদের জন্য এটা একটি হুশিয়ারি বার্তা যে, কোনো ধরনের স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড এদেশের জনগণ আর মেনে নিবে না।

তারা আরও বলেন, আগে দেয়ালে অযাচিতভাবে পোস্টার লাগানো ছিলো। যা শহরের সৌন্দর্য নষ্টের কারণ। সেগুলো পরিষ্কার করে আমরা গ্রাফিতি এঁকেছি। দেশ বিনির্মাণে ছাত্রজনতার আন্দোলনের এসব স্মৃতি উজ্জীবিত করবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ছাত্রসমাজকে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবীদের বসুন্ধরা সিমেন্ট ও মোনালিসা স্যানিটারি ন্যাপকিনের পক্ষ থেকে ছাতা এবং বসুন্ধরা টিস্যুর পক্ষ থেকে টিশার্ট ও টিস্যু উপহার দেওয়া হয়। উপহার পেয়ে তারা বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *