মাদারীপুরে নারী টোকাইকে এক মাসের খাদ্য সহায়তা দিল বসুন্ধরা শুভসংঘ

 

“আমি ভিক্ষ্যা করি না, পথে পথে বোতল কুড়াইয়া দুহানে বেইচ্যা তারপরে খাই, কোন দিন একবার, কোন দিন দুইবার খাই। বোতল ব্যাচা (বিক্রি) টাহায় যা জুটে তাই দিয়্যা খাই। মাইষে আমারে ভিক্ষুক মনে করে, কন তো আমার একটা সনমান আচে না? আমি যে কাম (কাজ) কইর‌্যা খাই, মাইষেরা হেডা বুজে না।” এই কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার কুলপদ্মী এলাকার বৃদ্ধা নারী টোকাই আনোয়ারা বেগম। তার বক্তব্যের এমন একটা ফেইজবুক পোস্ট দেখে বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান কালের কণ্ঠ মাদারীপুর আঞ্চলিক প্রতিনিধি ও বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ওহিদুজ্জামান কাজলকে মোবাইল করেন। বসুন্ধরা গ্র“পের অর্থায়নে আনোয়ারা বেগমের জন্য এক মাসের খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে দিতে বলেন। তার নির্দেশে আজ মঙ্গলবার (২৫জুন) দুপুরে আনোয়ারা বেগমকে ডেকে এনে তার হাতে এক মাসের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয়া হয়। যার মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, আলু, পিয়াজ, চিনি, মুড়ি, চিড়া, ডিম, সাবানের গুড়া, দুধের গুড়া, চা পাতা, টয়েলেট টিসসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। প্রথমে তিনি এসব খাদ্য সামগ্রী নিতে আপত্তি জানায়। পরে বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা তাকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, এগুলো ভিক্ষা নয়, ঢাকা থেকে একজন স্যার আপনার জন্য পাঠিয়েছেন। পরে আনোয়ারা বেগম হাসিমুখে তা গ্রহণ করেন।

শহরের ২নং শকুনী রোডে নকশীকাঁথা অফিসের সামনে আনোয়ারা বেগমের হাতে এ মানবিক সহায়তা তুলে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা বিশিষ্ট সাহিত্যিক সুবল বিশ্বাস। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নকশীকাঁথার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আয়শা সিদ্দিকা আকাশী। কালের কণ্ঠ মাদারীপুর আঞ্চলিক প্রতিনিধি ও বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ওহিদুজ্জামান কাজলের সভাপতিত্বে আরো আরো উপস্থিত ছিলেন- বসুন্ধরা শুভসংঘ, মাদারীপুর জেলা শাখার দিদার, ইরশাত জাহান, অধরা, মিথিলা, সুরাইয়া, স্নিগ্ধ আক্তার, হিমেল, আকলিমা, ইমন, নোমান, সুমাইয়া, স্বর্ণা, শিখা, সবুজ হাওলাদার প্রমুখ।

বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা সুবল বিশ্বাস বলেন, “বসুন্ধরা শুভসংঘ দীর্ঘদিন ধরে অসহায় মানুষের পাশে থেকে বিভিন্ন ধরণের মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। জন্য কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমারও ভালো লাগে তাদের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে। বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর শাখার স্বেচ্ছাসেবিরা লেখাপড়ার পাশাপাশি যেভাবে মানবিক কার্যক্রমে নিজেদের উৎসর্গ করেছে; তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও দুই বাংলার নন্দিত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন স্যারকে। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্নাাই বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানসহ সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল বন্ধুকে।”

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *