গাইবান্ধার বৃদ্ধা শ্রমে তাপদাহজনিত রোগের ওষুধ উপহার
গাইবান্ধায় প্রচন্ড গরমে বিপর্যস্ত মানুষের জীবন। বিশেষ করে শ্রমজীবি মানুষ, দু:স্থ অসহায় শিশু ও বৃদ্ধরা নানা ধরণের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভ সংঘ, গাইবান্ধা জেলা শাখা।
গতকাল মঙ্গলবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ফুলবাড়ি ইউনিয়নেরছোট সোহাগী গ্রামে জেলার একমাত্র বৃদ্ধাশ্রম ‘মেহেরুন্নেসা’য় আশ্রিত ৪৫জন নারী পুরুষের হাতে জরুরী ওষুধ ও স্যালাইন উপহার দেন শুভ সংঘের কর্মীরা। তাদের হাতে ওষুধের বাক্স তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ শুভসংঘের উপদেষ্টা সঙ্গীত শিল্পী ও রাজনীতিক পাপিয়া রায় পাখি (মুনিয়া), ফুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: মোস্তাফিজার রহমান (মোল্লা), শুভ সংঘের সাবেক জেলা সভাপতি হুমায়ূন আহমেদ বিপ্লব , মেহেরুন্নেসা বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো: আপেল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মো: সামসুজ্জোহা, সদস্য মো: আশরাফুল ইসলামসহ অন্যরা।
জেলা শুভ সংঘের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব বলেন, এখান যারা বাস করছেন তারা সকলেই প্রবীণ। প্রচন্ড গরমের কারণে তারা অনেকেই সর্দি-জ্বর, কাশি , ডায়রিয়া গ্যাস্টিক আমাশয়সহ নানা ধরণের পেটের অসুখে ভুগছেন। তাৎক্ষনিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শে তারা হাতের কাছে এসব রোগের কিছু জরুরী ওষুধ পান সেই উদ্দেশ্য নিয়েই শুভ সংঘ ওষুধ পৌঁছে দিতে এসেছে।
ছেলে মেয়ে নাতি পুতি বাড়ি থেকে বের করে দিলেও বৃদ্ধাশ্রমে ৬ -৭ বছর ধরে জীবন কাটানো আবু কাশেম (১০৩) , ফরসি মাহমুদ(১০৯) , জাবেদ আলী(৯৯) , লিলি বেগম(৯০), লাইলী বেওয়া(১০৩), মজিরণ বেওয়া (৯৫)আজও তাদের অভাব বোধ করেন। শুভ সংঘের তরুণ বন্ধুদের কাছে পেয়ে ভীষন খুশি তারা ।
আবু কাশেম বললেন, ‘আমাদের কথা কেউ ভাবিচ্চে, দেখতে আসিচ্চে -তাতেই ভাল লাগিচ্চে। কারণ আত্মীয় স্বজন খোঁজ খবর রাখে না। তার উপর দিয়্যা ম্যালাগুলা ওষুধ! মন ভরি গেল বাপধন’।
ফোঁকলা দাঁতে লাইলী বেওয়া’র হাসি আর ধরে না! তিনি বললেন, কয়েকদিন যাবৎ নামাজত বসিয়্যা আল্লাহ’র কাছে বৃষ্টির জন্য মুনাজাত করি। গরমে থাকিয়্যা খালি অসুখ ধরে। তোমাদের ওষুধগুলা হামার কামে আসপ্যি। ’
গোবিন্দগঞ্জ শুভসংঘের উপদেষ্টা সঙ্গীত শিল্পী ও রাজনীতিক পাপিয়া রায় পাখি (মুনিয়া) বললেন, ‘এই বৃদ্ধ বাবা মা’দের দেখে বুকের মধ্যে একধরণের ব্যাথা অনুভব করছি। শুভ সংঘের মাধ্যমে এখানে তাদের কল্যানের জন্য অবশ্যই কাজ করা হবে।’
বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো: আপেল মাহমুদ বসুন্ধরা শুভ সংঘকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, ‘প্রতিমাসে এইসব বাবা মা’র জন্য ৩-৪ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। অনেক কিছুই করা সম্ভব হয়নি। যদি এখানে একটি সোলার প্যানেল কেউ দান করতেন তাহলে এই সব বাবা মা উপকৃত হতেন।
এই আয়োজন সমন্বয় করেন শুভসংঘের উপজেলা সভাপতি তনু রায়, কর্মী সিয়াম সিদ্দিক, অয়ন সুলতান ও দীপ মহন্ত।