চিলমারীতে দুস্থ নারীদের মাঝে বসুন্ধরার সেলাই মেশিন বিতরণ
কুড়িগ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে অস্বচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে চিলমারী উপজেলা অডিটোরিয়াম হলরুমে দুস্থ ও অস্বচ্ছল ২০ নারীকে এসব মেশিন দেওয়া হয়।
বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠর জেলা প্রতিনিধি আব্দুল খালেক, আঞ্চলিক প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান মানু, কালের কণ্ঠ উত্তরঞ্চল ডিজিটাল সমন্বয়ক সোহেল রানা স্বপ্ন, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি তামজিদ তুরাগ, নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির সূর্য, চিলমারী উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক সাওরাত সোহেল প্রমুখ।
দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ চালু করে। তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে আর্থিকভাবে স্বাভলম্বী করতে তাদের সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।
মেশিন পেয়ে শাহিমা বেগম আবেগআপ্লুত হয়ে বলেন, আট বছর আগে দুটি সন্তান রেখে আমার স্বামী ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করছে। সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটত আমাদের। সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন পেলাম। আশা করি এই কাজ করে আমি সন্তানদের নিয়ে ভালো থাকতে পারব। আল্লাহ বসুন্ধরা শুভসংঘের ভালো করুক।
রিক্তা খাতুন নামের আরেক সুবিধাভোগী বলেন, আমার বাবা দিনমজুর। আমি স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এতদিন কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। সেলাই মেশিনটা পেলাম এতে করে খুবই উপকৃত হলাম। এখন পড়ালেখা পাশাপাশি নিজ ও পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।
লাবনী আক্তার বলেন, কয়েক বছর আগে বাবা মারা যান। বাবা বেঁচে থাকাকালেও সংসারে টানাপড়েন থাকত। এর মধ্যে পড়ালেখার খরচ জোটাতে পারিনি। টানাটানি করে এইচএসসি পাস করেছি। এখন স্নাতক পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। শুভসংঘের মাধ্যমে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে সেলাই মেশিন পেলাম। এখন সেলাইয়ের কাজ করে পড়ালেখার খরচ জোটাতে পারব।
শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে সারাদেশে পর্যায়ক্রমে পাঁচ হাজার অস্বচ্ছল পরিবারের নারীদের স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেলাই মেশিনগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। যাতে গ্রামীণ নারীরা নিজে এবং তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারে।
তিনি আরো জানান, করোনার সময় আমরা ৪৮ হাজার পরিবারকে বসুন্ধরা শুভংঘের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা করেছি। বসুন্ধরা শুভসংঘ সব সময় মানবিক করে যাচ্ছে। দারিদ্রপীড়িত উপজেলা চিলমারীতে শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের জন্য পাঠদানের জন্য স্কুল ও হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা করা হবে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, চিলমারী একটি অনগ্রসর এলাকা। দারিদ্রপীড়িত এ উপজেলায় বসুন্ধরার এমন মহতি উদ্যোগ আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সেলাই মেশিন পেয়ে সুবিধাভোগীরা নিজ এবং পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে পাবে বলে আশা করছি।