ময়মনসিংহে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগ দেয়ালে দেয়ালে প্রতিবাদ আর প্রত্যাশার গ্রাফিতি

 

একদিকে প্রতিবাদের মিছিল কিংবা স্লোগানের ছবি, অপরদিকে ভবিষ্যত বাংলাদেশের স্বপ্ন ময় সম্ভাবনার চিত্র, দৃষ্টি নন্দন এমন গ্রাফিতি ময়মনসিংহ নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলির দেয়ালে। বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থীর এমন প্রতিবাদ আর প্রত্যাশা মুখর কর্মযজ্ঞে অংশ নিচ্ছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরাও। গত সপ্তাহ খানেক সময় ধরে লাগাতার ভাবে তারা এ কাজটি করে যাচ্ছেন। শুভসংঘের এমন কাজ এরই মাঝে চোখে পড়েছে আনন্দ মোহন কলেজ সহ বিভিন্ন স্থানে। শুভসংঘের উদ্যোগে সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার স্কয়ার ফুটের প্রাফিতির কাজ শেষ করা হবে ময়মনসিংহ নগরীতে। এরই মাঝে প্রায় ৫ হাজার স্কয়ার ফুটের কাজ শেষ হয়েছে। বসুন্ধরা টিস্যূর সৌজন্যে এ কাজটি সম্পন্ন হচ্ছে।

গ্রাফিতি সর্ম্পকে জানা যায় এগুলো এক ধরনের দেয়াল চিত্র। এগুলোতে নানা ধারনের বার্তা থাকে। বিশেষ করে সমাজ, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, জীবনাচরণ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অল্প কথায় বড় ধরনের বার্তা ছড়ায় এ গ্রাফিতি গুলো। আমাদের দেশে গ্রাফিতি একেবারে নতুন নয়। কিন্তু বিশাল কলেবরে বর্তমান সময়েই এর প্রসার চোখে পড়লো। ছাত্র – গণ আন্দোলনে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ আর প্রত্যাশা ছড়িয়ে দিল স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রাফিতির মাধ্যমে। সেটিও একেবারে খোদ রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত। এ ¯্রােতের বাইরে নেই দেশের অন্যতম শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহও। নগরীর দেয়ালে দেয়ালে প্রতিবাদ বিক্ষোভের এখন নানান চিত্র। নানান শ্লোগান। কোথাও আছে গানের কলি, কোথাও আছে কবিতার পংক্তি। দেয়ালে দেয়ালে মানুষের ক্ষোভ আর যন্ত্রণার গল্প, মানুষ চায় নতুন দেশ গড়তে, চায় নতুন সময়কে আলিঙ্গন করতে।
বিস্ময়ের বিষয় হলো গ্রাফিতি আকিয়ে শিক্ষার্থীদের বলতে গেলে বড় অংশেরই এমন কাজে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। অনেকেই এ বিষয়ে বলতে গেলে একেবারেই নতুন। তবু ইচ্ছা, চেষ্টা আর মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে শিক্ষার্থীরা নগরীর দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতির কাজ করেছেন।

শুভসংঘের সদস্যদেরও একাজে তেমন অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু তারা এ কাজে যুক্ত আছেন প্রায় সপ্তাহ খানেক সময় ধরে। এর আগে দেয়াল গুলো ঝেড়ে মুছে তারা পরিষ্কার করেছেন। করেছেন রং বার্ণিসের কাজ। এরপর হয়েছে গ্রাফিতি। নিজেরা পালা করে কাজ করেছেন। দিয়ে চলেছেন স্বেচ্ছা শ্রম। শুভ সংঘের সদস্যরা ছাড়াও তাদের কলেজের বন্ধুরাও যুক্ত হয়েছেন এমন ভিন্ন ধর্মী কাজে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুভসংঘের সদস্যরা নগরীর সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, টাউন হল মোড় সহ বিভিন্ন স্থানের দেয়ালে গ্রাফিতির কাজ করেছেন। এসব এলাকার কোনো দেয়ালই এখন আর তেমন বিবর্ণ নেই। দেয়াল গুলোর বড় অংশই গ্রাফিতির কারনে ভিন্ন দৃষ্টি নন্দন রূপ পেয়েছে।

গ্রাফিতিতে সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধার পাশাপাশি উঠে এসেছে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি, সমাজের-রাষ্ট্রের সংস্কার, ঘুষ – দূর্নীতি বন্ধ করা। আছে নতুন বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্নের কথাও। শুভসংঘ আনন্দ মোহন কলেজ শাখার সভাপতি সৈয়দ নাফিউল হাসান মুবিন বলেন, বসুন্ধরা টিস্যূর সহায়তায় ছোট ছোট অংশ মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার স্কয়ার ফুট গ্রাফিতি’র কাজ হবে। এরই মাঝে প্রায় ৫ হাজার স্কয়ার বর্গফুটের কাজ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন শুভসংঘের এ কার্যক্রম পরিদর্শন করে প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানউল্লাহ আমান স্যার এবং উপদেষ্টা নৌরিন সামান্তা সৌমি ম্যাম। এছাড়া এ গ্রাফিতি কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন শুভ সংঘ আনন্দ মোহন কলেজ শাখার শিক্ষার্থী উপদেষ্টা আরিফ আহমেদ বাবলু, সুমন্ত আয়ান সুমন এবং নিজামউদ্দিন সহ সভাপতি সাদমান আল সাকিব, নাহিদ ফেরদৌস খান, নাজমুল হক টিটু। সাধারণ সম্পাদক প‚জা চক্রবর্তী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লাবণ্য, রেজাউল করিম রাহাত, মইনুল ইসলাম সিয়াম। সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আল মুগ্ধ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিমানী মৈত্র রিম। ইভেন্ট সম্পাদক সামান্নাতুন জান্নাত মুমু। সদস্য মুসাব্বির সৌরভ, সুমাইয়া সাদিয়া, নিশাত মজুমদার, সানজানা সিরাজী স‚চি, আসমানী তালুকদার রাত্রি, সানজিদা হক জিসা, তাহিরা ইবনাত তোয়া,আফিয়াত আক্তার জয়া, শরিফ রায়হান, মাশরাফি রাহাত, জেসিয়া সারা জেরিন, লামিয়া খান প্রমুখ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *