গুলিতে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সহায়তা
পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বের হয়ে নিহত হন রনি প্রামাণিক। গত ২১ জুলাই ঢাকার সাভারের বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন রিকশাচালক রনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে একটি গুলি এসে বিদ্ধ হয় তার বুকে।
মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সাভারের রাজাশন এলাকার ডেলটা মোড়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন রনি। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি সে। তার একার রোজগারে চলছিল পাঁচ সদস্যের সংসার। একদিন রিকশা না চালালে পেটে খাবার জুটতো না। এ কারণে কারফিউর মধ্যেও জীবিকার তাগিদে রিকশা চালানোর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। তারপর আর জীবিত ফেরেননি।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের পঞ্চদাস গ্রামের মৃত দিলবর প্রামাণিক ও শাহানা খাতুনের ছেলে রনি প্রামাণিক। সন্তানের মৃত্যুর পর লাশ দাফন করতে গ্রামে গিয়ে আর ঢাকায় ফেরেননি রনির মা শাহানা খাতুন।
অন্যদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর পাঁচ বছর ইয়াসিন ও দেড় বছর বয়সী ইভান দুই সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্ত্রী শামিমা আক্তার সাথী। বাসা ভাড়া দিতে না পেরে দুই শিশুসন্তান নিয়ে গরীব এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন তিনি। থাকার জন্য আপাতত ব্যবস্থা হলেও খাদ্যাভাবে ভুগতে হচ্ছে তাদের। ধারদেনা করে দুই সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে হচ্ছে। আবার অনেকে ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কায় ধারও দিতে চাচ্ছেন না বলে জানান রনির স্ত্রী।
এ অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। রনির পরিবারকে একমাসের খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছে সংগঠনটির ঢাকা জেলা শাখা। আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে সাভারের রাজাশনের দারোগা মার্কেট এলাকায় রনির স্ত্রী সাথীর হাতে এ খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে রনির সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল মুরগির মাংস, মাছ, চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবন, হলুদ–মরিচের গুড়া, পেয়াজ, রসুন, আলু, নুডলস, ঢেরস, লাউ ও পেপে।
বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শামিমা আক্তার সাথী। এ সময় তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
খাদ্যসামগ্রী উপহার প্রদান কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ ঢাকা জেলা শাখার আবীর খাঁন, সাব্বির আহমেদ শোভন, সাকিব হোসেন ফাহিম, মো. সজীব মোল্লা ও আতিক শাহরিয়ার রাসেল।