ইউনিসেফের সর্বশেষ জরিপ মোতাবেক বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত শিশুর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষাসামগ্রী আর অর্থের অভাবে এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশুই পড়ালেখা করতে পারে না। যথেষ্ট ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পাড়ি জমাতে পারে না নিজের স্বপ্নের ঠিকানায়। শিশুদের এই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে ও শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে ‘সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শাখা।
গতকাল ২৯ মে রোজ বুধবার চুয়েটের সাধারণ ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত ‘প্রদীপ’ স্কুলের ২৬ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এই আয়োজনটি করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। এরপর বেশ কিছুক্ষন তাদের সাথে গল্প করে, আবৃত্তি করে, গান গেয়ে আনন্দে সময় কাটান সংগঠনটির সদস্যরা। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই মূলত বসুন্ধরা শুভসংঘ চুয়েট শাখার আত্মপ্রকাশ ঘটে। উক্ত অনুষ্ঠানে শিশুদের হাতে খাতা, কলম, পেনসিল, ইরেজার, কাটার, রঙ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ চুয়েট শাখার প্রধান উপদেষ্টা ও চুয়েটের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ রাশিদুল হাসান।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে শিক্ষার্থীদের জন্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এসময় সকল শিক্ষার্থী উৎসাহের সাথে উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ও পরবর্তীতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এসময় ড. মোঃ রাশিদুল হাসান বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময়ই এমন সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে। বসুন্ধরা শুভসংঘ চুয়েট শাখার এটাই প্রথম কার্যক্রম। তারা এমন একটি প্রশংসনীয় কাজের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ধরনের কার্যক্রমে আমাদের সহযোগীতা সবসময় থাকবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলম বলেন, চুয়েট শিক্ষার্থীদের এমন কার্যক্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। এই সংগঠনটির এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আজকের এ ছোট ছোট শিশুরাই আগামীতে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কোনো শিশু যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য তাদের সব ধরনের সহযোগীতারও আশ্বাস দেন তিনি।
পরবর্তীতে পুরস্কার ও শিক্ষাসামগ্রী বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উক্ত কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে।