মেডিক্যালে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দুঃশ্চিন্তা মুক্ত হতে যাচ্ছেন সেই অসহায় মা
মেডিক্যালে ছেলেকে লেখাপড়ার খরচ কি ভাবে যোগাবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়া ওই অসহায় মা দুঃচিন্তা মুক্ত হতে যাচ্ছেন। অদম্য মেধাবী ফরহাদ হোসেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে এ বছর ভর্তি হয়েছেন। ছেলেকে মেডিক্যালে ভর্তির পর লেখাপড়ার খরচ কি ভাবে যোগাবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ফরহাদের মা হোসনেয়ারা খাতুন। গত মঙ্গলবার কালের কণ্ঠে মেডিক্যালে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন ওই খবরের সূত্র ধরে অসহায় মায়ের ছেলে ফরহাদ হোসেনের খোঁজ খবর নেন। বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ ফরহাদ হোসেনের মেডিক্যালে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চান।
অদম্য মেধাবী ফরহাদ হোসেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার জাহানপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান ও হোসনেয়ারা খাতুন দম্পত্তির ছেলে। তিনি এ বছর কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পান। ফরহাদ যখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তখন তার বাবা মনিরুজ্জামান স্টোক জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে কর্মক্ষমহীন হয়ে পড়েন। এ সময় হোসনেয়ারা খাতুন অন্যের কাঁথা সেলাই করে ৪ সদস্যের সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালান। ছেলেকে এলাকাবাসীর নিকট থেকে জাকাতের পাওয়া টাকা ও ভাইদের সহযোগিতায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন। ভর্তির পর থেকে ছেলের মেডিক্যালে লেখাপড়ার খরচ কোথায় পাবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়েন ফরহাদের মা। শুভসংঘ ফরহাদ হোসেনের মেডিক্যালে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চাওয়ার বিষয়টি শুভসংঘ পরিচালক জাকারিয়া জামানের নিকট থেকে জানতে পরে কালের কণ্ঠের এ প্রতিনিধি ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। ফরহাদের অসহায় মা বাবা বিষয়টি জানাতে পেরে আনন্দে তাদের চোখে পানি গড়িয়ে আসে। অসহায় মা হোসনেয়ারা খাতুন এ সময় বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ তার ছেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলে সারা জীবন বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য দোয়া করে যাবেন। বাবা মনিরুজ্জামান বলেন তাদের পক্ষে কোন ভাবে ছেলের মেডিক্যালে লেখাপড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ফরহাদ হোসেন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের সহয়াতায় মেডিক্যালে পড়ে ডাক্তার হতে পারলে সারা জীবন অসহায় মানুষের পাশে থেকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাবেন।
ফরহাদ হোসেনের বড় চাচি জোহরা খাতুন বলেন, ফরহাদ ছোট কাল থেকেই লেখাপড়ায় ভালো। ছেলেটি কখনো বই পড়া বাদ দিয়ে অহেতুক ঘোরা ফেরা করেনি। যে কারণে এলাকার সকল মানুষ ফরহাদকে খুব ভালোবাসে। মেডিক্যালে পড়ার খরচ পেলে সে একদিন ডাক্তার হয়ে অসহায় গরিব মানুষের সেবা করতে পারবে।