বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন পেয়ে স্বাবলম্বী বীরগঞ্জের নারীরা
শুভকাজে সবার পাশে, এ স্লোগান নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ দেশব্যাপী হতদরিদ্র ও নিপিড়ীত জনগোষ্ঠী ও গ্রামীন নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। তারই ধারাবাহিকতার অংশ হচ্ছে অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলা। বিনামূল্যে হাতে কলমে সেলাই প্রশিক্ষন এবং প্রশিক্ষন শেষে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম। ৯০ দিনের হাতে কলমে প্রশিক্ষন শেষে গত ৯ মার্চ দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাকড়াই গ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল প্রাঙ্গনে ২০ জন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত অসচ্ছল নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়।
১৯ আগষ্ট সোমবার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড মাকড়াই গ্রামে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, তারা এখন অনেকেই স্বাবলম্বী। নারীরা সেলাই মেশিন পেয়ে এখন অনেক পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। অনেকেই ঘরে বসে কাপড় সেলাই করে বাড়তি আয় করছে তা দিয়ে সংসারের খরচ বহন করছে।
বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন পাওয়া আলফি বেগম (২৩) জানান, তার স্বামী পেশায় কাঠমিস্ত্রী , কোনদিন কাজ থাকতো কোনদিন থাকতোনা। যা উপার্জন করত তা দিয়ে পরিবারের ছেলে মেয়ের পড়াশোনা সহ সংসারের খরচ চালাতে আগে হিমসিম খেতে হতো। বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন পাওয়ার পর এখন বাড়িতে বসে নিজের পরিবারের কাপড় সেলাই এর পাশাপাশি পাড়া প্রতিবেশীর কাপড় সেলাই করে প্রতিমাসে আমার বাড়তি আয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা তা দিয়ে বর্তমানে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
একই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মনিকা মুরমু (৩৫) জানান, আগে দিনমজুরি কাজ করে যা আয় হতো তা দিয়ে ছেলের লেথাপড়া ও পরিবারের খরচ চালাতে হিমসিম খেতে হতো। এখন অন্যের কাপড় সেলাই করে বাড়তি আয় হ”্ছে আর ছেলে বিনামুল্যে শুভসংঘ স্কুলে পড়ে, আগের থেকে দিনকাল অনেক ভালোই যাচ্ছে কারণ ঘরে বসে কাপড় সেলাই করে ১২শত থেকে ১৪শত টাকার মতো আয় হচ্ছে। আগে কতইনা অভাবে দিন কাটতো, সংসার চালাতে পারিবারিক কলহ , টাকা নেই , খাবার নেই কি একটা দূরঅবস্থা ছিল কিন্তু বসুন্ধরা শুভসংঘে সেলাই মেশিন পাওয়ার পর ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে কখনো ভাবতে পারি নাই এজন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের সকলের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
কাপড় সেলাই করতে আসা মুন্নী বেগম (৩৫)জানান, আমি কাপড় সেলাই করতে এসেছি আগে শহরে গিয়ে কাপড় সেলাই করতাম কিন্তু এখন বাড়ীর কাছেই দর্জি হওয়ায় আর শহরে যাওয়া লাগে না। শহরের দর্জির থেকে তাদের সেলাইয়ের মান অনেক ভালো এবং মজুরি কম তাই আমি খুব খুশী।
এ বিষয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী জানান, বসুন্ধরা শুভসংঘ মানবিক কাজগুলো সত্যিই অনেক প্রশংসনীয়। তাদের মানবিক কর্মকান্ডের ফলে অস্বচ্ছল নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে ও স্বাবলম্বী হচ্ছে। তাদের মহতী উদ্যোগ গ্রহনের জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘকে ধন্যবাদ জানাই।