বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত ২ পরিবার পেল বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শ্রমজীবী দুই পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দিলো বসুন্ধরা শুভসংঘ। রবিবার দুপুরে ওই দুই পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বগুড়া জেলা শাখার সদস্যরা।
বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন আব্দুল মান্নান(৫৮)। ৯ সদস্যের পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য রিকশা চলাতেন মান্নান। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে। কিন্তু বাড়ির এতো সদস্যের খাবার সংস্থানের কোন ব্যবস্থা নেই। একারণে রিকশা নিয়ে বের হন মান্নান। বগুড়া শহরের বড়গোলা এলাকায় একদিকে ছাত্র জনতা, অন্যপাশে পুলিশের অবস্থান। এর মাঝখানে পড়েন তিনি। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মান্নান। এখন সন্তানদের নিয়ে নিয়ে চরম সংকটে দিন কাটছে মান্নানের স্ত্রী হাসনা বেগমের। বিষয়টি জানার পর বসুন্ধরা শুভসংঘ তার বাড়িতে হাজির হয় খাদ্য সহায়তা নিয়ে। ২৫ কেজি চাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুরের ডাল, ২ কেজি পেঁয়াজ, ৩ কেজি আলু, ২ কেজি আটা ও কিছু সবজি তুলে দেয়া হয় ওই পরিবারের সদস্যদের হাতে। এসময় আবেগে কোন কথাই বলতে পারেননি তারা। তাদের প্রতিবেশী জাহানারা বেগম বলেন, ‘একে তো পরিবারের কারো কুনু আয়- উপার্জন নাই, তার ওপরে ৩ডা মেয়েছ্যোল আছে। মাটির লড়বরে ঘরোত থাকে তারা। সংসার চালাবি কি করে, আর মেয়েগুলোর গতিই বা কি হবি, সেডেই এ্যাকন চিন্তের কতা।’
একই ইউনিয়নের বানদীঘি ইসবপুর পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন রিপন মিয়া(৩৮)। শ্রম বিক্রি করে তিন সদস্যের সংসার চালতো তার। ৪ আগষ্ট কোন কাজ না পাওয়ায় এলাকার লোকজনের সাথে আন্দোলন দেখতে শহরে যান রিপন। এরপর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। তার স্ত্রী সাবিনা বেগব বলেন, ‘মানুষটা না থাকায় হামরা মাও-ব্যাটা অ্যাকট দরিয়াত পড়ছি। ব্যাটা(ছেলে) বড় হলে না হয় আয়-রোজগারের চিন্তে থাকলোনাহিনি। জায়গা-জমিন কিচউ নাই, কি করে যে দিন পার হয় তা ভাবেই পাচ্চিনে।’
এই দুই নিহতের অসহায় পরিবারে খাদ্য সহায়দা প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া আদর্শ কলেজের সহকারি অধ্যাপক হারুন আর রশিদ, বগুড়া শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক আশফাক উর রহমান চন্দন, সহ-সাধারণ সম্পাদক রায়হান সিদ্দিকী সজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনর রশীদসহ অন্যান্য শুভার্থী।