গাইবান্ধায় বসুন্ধরা শুভ সংঘের ইদ উপহার পেল ১০ পরিবার
গাইবান্ধা সদর উপজেলার ও ফুলছড়ির চরাঞ্চলের ১০ পরিবার পেল বসুন্ধরা শুভ সংঘের ঈদ উপহার । ইদের দিনটিতে তারা যেন নির্ভাবনায় হাসি আর আনন্দে কাটাতে পারে এজন্য তাদের হাতে সেমাই , চিনি, গুঁড়ো দুধ, মুড়ি , মুরগি, পোলাও’র চাল, আটা, তেল, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, গুঁড়ো মশলা ও নগদ টাকা তুলে দেন শুভ সংঘের বন্ধুরা।
সোমবার দুপুরে মূল বিতরণ অনুষ্ঠানটি বোয়ালী’র থানসিংহপুরের গুচ্ছ গ্রামের সালমা বেগমের পরিবার কেন্দ্রীক হলে বাকিদের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন, সদরের রামচন্দ্রপুরের গৃহকর্মী সালেহা খাতুন ও তার অসুস্থ স্বামীসহ দুই সন্তান, থোলাহাটির বিধবা কৃষি শ্রমিক আসমানী বেগম ও তার তিন সন্তান, গিদারীর অন্যে বাড়িতে আশ্রিত ইট ভাটা শ্রমিক আনতারা খাতুন ও তার স্বামীসহ ছেলে মেয়ে, জেলা শহরের নিম্নবিত্তপরিবারের দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রীসহ ৫ সদস্যের পরিবার , ফুলছড়ির উদাখালির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়ক ও তার ৩ সদস্যের পরিবার, জেলা শহরতলীর বৃদ্ধ ও তার স্ত্রী, এক মৎস্যজীবি ও তার দুই সদস্যের পরিবার, সাদুল্যাপুরের নৈশ প্রহরী আনিছুর ও তার ৪ সদস্যের পরিবার, হক্রা তানজেমুল ও তার দুই সদস্যের পরিবার ।
সালমা বেগমের সাথে ছিলেন তার মা সরিজল বেগম, দুই মেয়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী ৮ বছরের সিনথিয়া ও নবম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে সুরাইয়া। শুভ সংঘের বন্ধুরা তাদের হাতে ঈদের দিনের উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়ার সময় সালমা বেগমের চোখে ছিল অশ্রু বিন্দু। তিনি বললেন, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম ছিলেন রড মিস্ত্রী। তিন বছর আগে তিনি মারা যাওয়ার পর সংসার টানতে তার নানা ধরেণের কাজ করতে হয়। খেয়ে না খেয়ে মেয়েদের বড় করেছেন। গুচ্ছগ্রামে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে পড়েছেন মহা বিপাকে। অন্যদিকে মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও বড়মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার যোগাড়। এবার ঈদের দিন পরিবারের সবার মুখে একটু ভাল মন্দ খাবার তুলে দেওয়ার চিন্তায় অস্থির ছিলেন। নিজের ভাষায় বললেন, ‘আমি খুব্যে গরীব মানুষ। হামার দিনআনা দিন খাওয়া সংসার । তোমরা ইদের খুশি উপহার দিলেন। আল্লাহপাকের কাছে দোয়া করি বসুন্ধরা শুভ সংঘের সগল্যের হায়াত দারাজ হোক। ’
উপস্থিত অতিথি উন্নয়ন কর্মী শেফালী বেগম বলেন, ‘শুভ সংঘের এই সব তরুণ কিশোররা মানবিক চেতনায় উদ্বুব্ধ হয়ে শুভ কাজ করতে শিখছে । এই ব্যাপারটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। ’
বিতরণ কর্মসূচি সমন্বয় করেন শুভ সংঘের সংগঠক তানহা তাশফিয়া পূর্ণতা, বর্ণ প্রসাদ, মেঘলীনা দ্যুতি, ব্রতি প্রসাদ , তৌফিক মাহমুদ ও সাবেক জেলা সম্পাদক মো, আতিকুর রহমান এবং কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন ।
তানহা তাশফিয়া পূর্ণতা বলেন, ‘গাইবান্ধায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা আমাদের সবটুকু সামর্থ দিয়ে অন্তত ১০টি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করলাম।’