বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা পেল রাশিদুলের পরিবার

বৈশম্যবিরোধী আন্দোলনে শ্রমজীবীর মৃত্যু

আঁখি আকতার আশামনির হাতে বিয়ের মেহেদীর রঙ এখনো শুকায় নি। তবে এরি মধ্যে বিয়ের ২২ দিনের মাথায় তিনি হারিয়েছেন তার স্বামী রাশিদুল ইসলামকে। গত ৫ আগষ্টের সকালে বৈষম্যবিরোধেী আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবৃদ্ধ হয়ে নিহত হয় শ্রবজীবী রাশিদুল ইসলাম। সরকারী কোনো সহায়তা না মিললেও, অসহায় এই পরিবারটির পাশে দাড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের সেচ্ছাসেবী সংগঠন বসুন্ধরা শুভ সংঘ। 

গতকাল শুক্রবার নিহত রাশিদুলের পরিবারের কাছে বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা তুলে দেয় খাদ্য সামগ্রী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কালের কণ্ঠের উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি তামজিদ হাসান তুরাগ, দৈনিক খবর সংযোগের জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ছিলেন, নিহত রাশিদুলের পিতা বাচ্চু মিয়া মা আলেয়া বেগম প্রমুখ।

রাশিদুলের স্থায়ী নিবাস কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের কাঠগীরাই গ্রামে। তার বাবার নাম বাচ্চু মিয়া। রাশিদুল ঢাকার যাত্রাবাড়ির আদমজী গার্মেন্টেসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

জুলাই মাসের ১৬ তারিখ দুই পরিবারের সম্মতিতেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে হয় রাশিদুল ইসলাম (২১) ও আশামনি (১৮) দম্পতির। রাশিদুলের স্বপ্ন ছিলো বিয়ের ৩ মাস পর তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা। কিন্তু সেই স্বপ্ন হঠাৎ করেই দু:স্বপ্ন পরিণত হলো। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়িতে এখনও চলছে শোকের মাতম। বাড়ির পাশে প্যান্ডেল করে আয়োজন করা হয়েছে রুহয়ের মাগফেরাত কামনায় দোয়ার। 

রাশিদুলের ভাবি মৌসুমি খাতুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার স্বামী আলমগীর হোসেন সহ আমরা ঢাকায় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় থাকি। আমার স্বামী রিক্সা চালায়। আমি একটি গার্মেন্টসে কাজ করি। আমার ছোট দেবর ৫ দিন আগে আমাদের এখানে এসেছে। বিয়ে করেআদমজী গার্মেন্টস  এ সে নতুন  চাকরি নিয়েছে। মাত্র ২ দিন ডিউটি করেছে। এর মধ্যে এতো কিছু ঘটলো।

রাশিদুলের স্থী আশামনি বলেন, আমার স্বামী আমাকে রেখে এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি।  ৩ মাস পরে তার আসার কথা। কিন্ত সে পর ফিরলো লাশ হয়ে। আমি এর বিচার চাই। সামনে আমরা কী হবে জানিনা। তিনি আরো বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক ধন্যবাদ এই সময়ে আমার পাশে দাড়ানোর জন্য। রাশিদুলের শ্বশুর আকিজুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ের বয়স কম। সামনে তার আরো জীবন পড়ে রয়েছে। এখন আমরা দুই পরিবার এক সাথে বসবো তার পরে সিদ্ধান্ত নিব। যেটা করলে ভালো হয় সেটাই আমরা করবো। 

নিহতের পিতা বাচ্চু মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, বাবা আল্লাহ তোমারগুলাক ভাল করুক। বসুন্ধরা গ্রুপক ভাল করুক। তিনি আরো বলেন, বাড়ির সব ছোট চেংরাটা এভাবে গেইল। তা হামার গুলা ভাবনাত ছিল না। এখন তো মেয়েটার দিকত হামার দেখা নাগবে। আমরা দুই ঘর এক সাথে বসি তারপর সিদ্ধান্ত নিম যে কী করা যায়।

ছবির ক্যাপশন: গতকাল শুক্রবার নিহত রাশিদুলের পিতা বাচ্চু মিয়া ও মাতা আলেয়া বেগমকে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *